বিজয়ের বাংলাদেশ নিউজ ডেস্কঃ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত কয়লা আমদানির সরকারি, বেসরকারি ও যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো বিশ্লেষণে সরকার পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেছে। যার নেতৃত্ব দেবেন বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান।
সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ অফিসে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এ কমিটিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সমন্বয়), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। এ ছাড়া বিপিডিবির প্রধান প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ উৎপাদন), বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব (উন্নয়ন) কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সরকারি সূত্র অনুসারে, ভারতের ঝাড়খণ্ডে কয়লাভিত্তিক গোড্ডা প্ল্যান্ট থেকে এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য আদানি পাওয়ারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি ‘ত্রুটিপূর্ণ’ হওয়ার কারণে বাংলাদেশকে প্রতি মাসে ৭০০ কোটি টাকা ও বার্ষিক ৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে, বেশকিছু গণমাধ্যমের এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকার পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেছে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ‘২৩ জানুয়ারি ৯ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠিত হয়েছিল। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কমিটির প্রথম সভা হওয়ার কথা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রূপালী ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলা
সম্প্রতি আমদানির ঋণপত্র খোলার তথ্য জানিয়ে প্রতি টন কয়লা ৪০০ ডলার করে দাম ধরে বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছে আদানি গ্রুপ। আর এতেই নড়েচড়ে বসেছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডর কর্মকর্তারা। তাদের বিশ্লেষণ, আন্তর্জাতিক ইনডেক্স অনুযায়ী বেশি দামি কয়লায়, বিদ্যুতের দামও পড়বে বেশি। আর বিষয়টিকে আদানির অনিয়ম হিসেবেই পর্যালোচনা করছেন দেশের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।
সম্প্রতি সরকারের এক হিসেবে দেখা গেছে, পায়রা ও রামপালে দুটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা আমদানি করেই চালানো হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও বরিশালেও নির্মাণাধীন প্ল্যান্টে উচ্চমানের কয়লার দামও ধরা হয়েছে প্রতিযোগিতামূলক। এর মধ্যে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রতি মণ কয়লা ২৪৫ ডলারে কেনা হয়। চট্টগ্রামে বাঁশখালি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লার মণপ্রতি ২৫৪ ডলার এবং বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ারের জন্য কয়লা কেনা হচ্ছে ২৭০ ডলারে। কিন্তু কয়লার ক্যালিরিফিক ভ্যালু বা গুণগত দিক থেকে কম মানের কয়লা দিয়ে বেশি দাম চাইছে আদানি।
তাই কয়লা আমদানির জন্য এলসি খোলার বিষয়ে পাওয়া অনুরোধের পরে বিদ্যমান পিপিএ সংশোধন করতে আদানি গ্রুপকে চিঠি দিয়েছে বিপিডিবি।
জানা গেছে, পর্যালোচনা কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশের জন্য আইপিপিগুলোর সঙ্গে কয়লা সরবরাহ চুক্তি (সিএসএ) এবং বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) কয়লা মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করবে। সেই সঙ্গে কয়লা মূল্য সূচকও কয়লা সরবরাহকারী দেশ পর্যালোচনা করবে।
Leave a Reply